মোঃ সিরাজুল মনির,চট্টগ্রাম ব্যুরো:
সিএসডিএফ’র সাধারন সম্পাদক ও বিশিষ্ঠ নারী নেত্রী জেসমিন সুলতানা পারুর সভাপতিত্বে ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারণ সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরীর সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিএসডিএফ’র চেয়ারপারসন ও ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন। বিষয়ভিত্তিক আলোচনায় বক্তব্য রাখেন দৈনিক পূর্বকোনের সিনিয়র উপ-সম্পাদক ডেইহী মওদুদ, চট্টগ্রাম ডায়বেটিক জেনারেল হাসপাতালের প্রধান পুষ্ঠিবিদ হাসিনা আক্তার লিপি, পাঁচলাইশ থানা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ জাকিয়া আকতার। আলোচক ছিলেন জেলা পরিষদ সদস্যা রেহেনা চৌধুরী, চট্টগ্রাম সিটিকরপোরেশনের কাউন্সিলর আফরোজা কালাম, জেসমিন পারভীন জেসি, বেবী দোভাষ, শাহীন আকতার রোজী, কর্নফুলী উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারমান বানেজা বেগম ও চট্টগ্রাম ইউমেন চেম্বারের সহ-সভাপতি ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক কাউন্সিলর রেখা আলম চৌধুরী।
বিভিন্ন বক্তাগন বলেন নারীর বিরুদ্ধে সহিংষতা, বঞ্চনা, অন্যায্যতার সংগ্রাম নতুন বিষয় নয়। যুগে যুগে নারীর বিরুদ্ধে সহিংষতা ও সন্ত্রাস থেমে ছিলো না। আর ডিজিটাল বাংলাদেশের এ যুগেও বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারীরা ডিজিটাল সন্ত্রাসের শিকার হচ্ছেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও নারীদের চরিত্র হননের উদাহারনও কম নয়। রাজনৈতিক সুষ্ঠু চর্চার অভাবে পরিবারতন্ত্র পুরো রাজনীতিকে গ্রাস করেছে। পরীক্ষিত অনেক রাজনৈতিক কর্মী সঠিকভাবে মূল্যায়িত না হয়ে অনেকেই রাজনৈতিক পদগুলি দখল করছেন। ফলে রাজনীতিতে পরীক্ষিত ও ত্যাগীরা মনোনয়ন পাচ্ছেন না। সেখানে শাহেদ, ডাঃ সাবরিনা, জিকে শামীমদের মতো মতবলবাজ ও হাইব্রিডরা দখল নিচ্ছেন।
বক্তারা অভিযোগ করে বলেন এক সময় নারীর প্রতি সহিংষতার বিরুদ্ধে সমাজের বিবেক জাগ্রত হতো। ঘৃনা, প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে উঠতো তৃণমূল পর্যায়ে থেকে। কিন্তু কালের পরিক্রমায় সামাজিক উদ্যোগগুলিকে বানিজ্যিকীকরণ করার কারনে স্থানীয় ও স্বেচ্ছাশ্রমের মাধ্যমে গড়ে উঠা উদ্যোগেগুলিকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন। সেকারনে তৃণমূলে নারীরা নির্যাতিত হলে, ধর্ষনের শিকার হলে বা অন্যকোন সামাজিক অনাচারের শিকার হলে প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ আর সেভাবে দেখা যাচ্ছে না। এ অবস্থা থেকে পরিত্রান পেতে হলে তৃণমূলে সামাজিক উদ্যোগগুলিকে রাস্ট্রীয়, জাতীয় ও আর্ন্তজাতিক পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করতে হবে।
সংলাপে বিভিন্ন বক্তাগন বলেন স্থানীয় সরকারে নির্বাচিত নারীরা তাদের ন্যায্য অধিকার পাচ্ছেন না। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি হিসাবে জনগনের জন্য সেবা দিতে না পারলে পরবর্তীতে জনগনের মুখোমুখি হতে হবে। তাই তৃণমূলে সকল স্তরের মানুষের ঐক্য ও নেটওয়াকিং ছাড়া সরকারী-বেসরকারী উদ্যোগগুলির সফল কার্যকারিতার দাবি জানানো হয়। এছাড়াও চট্টগ্রামে বিভিন্ন সময়ে যৌতুকের নামে নানা উপটৌকন দাবি ও বিয়েতে বরযাত্রী খাওয়ানোর বিশাল আয়োজন বন্ধ, দেনমোহরে স্বর্ণের দাম প্রচলিত দামের সাথে সমন্বয় করা, গণপরিবহনে নারীদের জন্য কমপক্ষে এক চতুর্থাংশ সীট সংরক্ষন, তরুন জনগোষ্ঠিকে প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড বাড়ানোর প্রস্তাব করা হয়।