করোনা ভাইরাস নিয়েই শেষ হতে চলল আরেকটি শিক্ষাবর্ষ। আর কদিন পরই নতুন বছর। নতুন বছর মানেই নতুন ক্লাস, আর নতুন বইয়ের উৎসব। নতুন বইয়ের ঘ্রাণে শিক্ষার্থীদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস। উৎসব আমেজে নতুন বই হাতে পাওয়ার লোভে বছরের প্রথম দিনটির জন্য অপেক্ষায় থাকে সারাদেশের কয়েক কোটি শিক্ষার্থী। তবে এবার সব কিছুই যেন ব্যতিক্রম। প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস এলোমেলো করে দিয়েছে সব। নতুন বইয়ের অপেক্ষা থাকলেও উৎসবের আমেজ থাকছে না এবার। কারণ, বই উৎসব না করে বিকল্প উপায়ে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দেয়ার সিদ্ধান্তের কথা আগেই জানায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। যদিও ওই সময় বিকল্প উপায় কী হবে, দুই মন্ত্রণালয় তা স্পষ্ট করেনি। এবার শিক্ষার্থীদের হাতে বই পৌঁছানোর বিকল্প উপায় নির্ধারণ করে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অবশ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত নির্দেশনা এখনো পাননি বলে জানিয়েছেন মাউশি (মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর)’র কর্মকর্তারা। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের নির্দেশনা অনুযায়ী- বই উৎসবের পরিবর্তে এবার শুধু বই বিতরণ করা হবে। অর্থাৎ শিক্ষার্থী বা অভিভাবক এসে স্কুল থেকে বইগুলো সংগ্রহ করে নিয়ে যাবে। কোনো ধরনের জমায়েত করা যাবে না। অর্থাৎ শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে স্কুল থেকে বই নিতে হবে। একেক দিন একেক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের হাতে প্যাকেটজাত বই তুলে দেয়া হবে। ভিন্ন ভিন্ন দিনে ক্লাস ও রোল অনুযায়ী শিডিউল তৈরি করবে স্কুলগুলো। নির্ধারিত দিনের সুনির্দিষ্ট সময়ে শিডিউলভুক্ত ক্লাসের শিক্ষার্থীরা এসে বই সংগ্রহ করে নিয়ে যাবে।
এ তথ্য নিশ্চিত করে চট্টগ্রাম জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, বই বিতরণ উপলক্ষে স্কুলেই কোনো ভাবেই জমায়েত করা যাবে না। জমায়েত না করার জন্যই একাধিক দিনে বই বিতরণের নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো মতেই ঝুঁকিতে না পড়ে। তবে কয়দিনে বই বিতরণ করা হবে, তা সংশ্লিষ্ট স্কুলের শিক্ষার্থীর সংখ্যা বিবেচনায় সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কিছু স্কুল আছে, যেখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা বেশি। আবার তুলনামূলক কম শিক্ষার্থীর স্কুলও আছে। এক্ষেত্রে দুটি স্কুলের জন্য দু’ধরণের সিদ্ধান্ত হবে।
শহীদুল ইসলাম বলেন, স্কুলগুলোতে আগে থেকেই প্রতিজনের বই প্যাকেট/বাঁধাই করে রাখা হবে। স্কুলের শিক্ষকরা শ্রেণিভিত্তিক শিক্ষার্থীদের তালিকা করে আলাদা আলাদা সময় দিয়ে একটি সিডিউল করবেন। ওই সিডিউল অভিভাবকদের ফোনে জানিয়ে দেয়া হবে। নির্ধারিত সিডিউল অনুযায়ী শিক্ষার্থী বা অভিভাবক এসে বইগুলো নিয়ে যাবে। মোটকথা স্কুলে একই সময়ে যাতে বেশি সংখ্যক শিক্ষার্থী বা অভিভাবকের জমায়েত না হয়, সেভাবেই বই বিতরণ কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। বই উৎসবের তো প্রশ্নই আসে না। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা সকল উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে স্কুল সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেয়া হচ্ছে বলেও জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম।