কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে জাতিসংঘবিরোধী বিক্ষোভের দ্বিতীয় দিনে সহিংসতায় ৩ শান্তিরক্ষীসহ ১৫ জন নিহত হয়েছেন। স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার এ সহিংসতার ঘটনায় আহত হয়েছেন অনেকে। খবর আল–জাজিরার।
সোমবার কঙ্গোতে নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তি রক্ষা মিশনের (এমওএনইউএসসিও) বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় কিভু প্রদেশের প্রধান শহর গোমার রাস্তায় বিক্ষোভ শুরু হয়।
বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, দশকের পর দশক ধরে সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো যে তৎপরতা চালাচ্ছে, তা থামাতে পারছে না মিশন। গতকাল মঙ্গলবার বেনি শহরের উত্তরাঞ্চল ও বুতেম্বুতেও বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে। কঙ্গো সরকারের মুখপাত্র প্যাট্রিক মুয়ায়া বলেছেন, গোমার সহিংসতায় ৫ ব্যক্তি নিহত এবং ৫০ জন আহত হয়েছেন। আর বুতেম্বুর স্থানীয় পুলিশপ্রধান পল এনগোমা বলেছেন, শহরটিতে সাত বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
এক বিবৃতিতে জাতিসংঘের শান্তি রক্ষা মিশন বলেছে, বুতেম্বুতে সহিংসতায় মিশনের তিন সদস্য নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন শান্তিরক্ষী সেনা ও অপর দুজন জাতিসংঘের পুলিশ কর্মকর্তা।
জাতিসংঘ বলছে, বিক্ষোভকারীরা কঙ্গোর পুলিশ সদস্যদের কাছ থেকে ‘সহিংসভাবে অস্ত্র ছিনিয়ে নেন’ এবং শান্তিরক্ষী বাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন। তাঁরা পাথর ও পেট্রলবোমা ছুড়েছেন এবং বিভিন্ন স্থাপনায় লুটপাট ও ভাঙচুর চালিয়েছেন।
জাতিসংঘের উপমুখপাত্র ফারহান হক এক বিবৃতিতে বলেন, সংস্থার মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষীদের লক্ষ্য করে যেকোনো হামলার ঘটনা যুদ্ধাপরাধের শামিল হতে পারে। এসব ঘটনা তদন্ত এবং দায়ী ব্যক্তিদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনতে কঙ্গো কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানিয়েছেন গুতেরেস।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স বলছে, নিহত তিন শান্তিরক্ষীর মধ্যে দুজন ভারতীয় নাগরিক। বুতেম্বু শহরের পুলিশপ্রধান বলেছেন, নিহত অপর শান্তিরক্ষী মরক্কোর নাগরিক।
কঙ্গোতে নিয়োজিত জাতিসংঘ মিশনটি বিশ্বের বড় শান্তি রক্ষা মিশনগুলোর একটি। তবে দেশটির পূর্বাঞ্চলে মিশনটি নিয়মিতই সমালোচনার মধ্যে থাকে। স্থানীয় মানুষদের অনেকের অভিযোগ, দশকের পর দশক ধরে চলা রক্তপাতের ঘটনা বন্ধ করতে যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে না এ মিশন। এ এলাকায় ১২০টি সশস্ত্র গোষ্ঠী সক্রিয় রয়েছে।