(রিপন ওঝা,মহালছড়ি)
মহালছড়ি সদর ইউনিয়ন বাজারের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার অভাবে সরকারী রাস্তা দিয়ে যানবাহন চলাচল ও সাধারণ জনগণসহ বাজারে আগত ক্রেতা-বিক্রেতাদের এবং সাধারণ জনগণের স্বাভাবিক চলাচলে ব্যাঘাত ঘটছে।
উপজেলার অভ্যন্তরীণ ও অন্য উপজেলা হতে আগত স্থানীয় ভাবে উৎপাদিত নিত্য প্রয়োজনীয় কৃষিপন্য ও মৌসুমী ফলমূল বিক্রয় কারীদের বেচা-কেনা করতে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর জন্য স্থানীয় উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এক বিশেষ জনগুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহন করেছেন।
উক্ত বাজার সম্প্রসারণের প্রয়োজনীয় কোন উদ্যোগ বা পদক্ষেপ গ্রহন করেন নাই, পরিনামে বাজারের দোকানদার ব্যবসায়ীবৃন্দ এবং ভাসমান সবজি বিক্রেতাগণ নিজেদের মতো করে ব্যবসা পরিচালনা ও দোকানদারী করে আসছেন বছরের পর বছর। আর এভাবে ব্যবসা ও দোকানদারী করতে গিয়ে দোকানদার ও ব্যবসায়ী গণকে কোন রকম নিয়ম-নীতি ও শৃংখলা মেনে চলার তাগিদ দেননি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, প্রশাসন ও আইন শৃংখলা কর্তৃপক্ষ। এমনি ভাবে বছরের পর বছর গত হওয়ায় আর দোকানদারগণও প্রশাসনের কোন রকম মনিটরিংএর আওতায় না থাকায় দোকানের সামনের অংশ বৃদ্ধি করতে করতে বাজারের সমস্থ অলি-গলি সংকুচিত করে ফেলায় জনসাধারণের ও বাজারে আগত ক্রেতা বিক্রেতাদের অসহনীয় দুভোর্গ পোহাতে হচ্ছে, এরই পাশা-পাশি বাজারের মাঝখানের সরকারী বড় রাস্তারও একই দশা। প্রতি মঙ্গঁলাবার মহালছড়ি বাজার সাপ্তাহিক হাটের দিনে সপ্তাহের একদিন উপজেলা এলাকার প্রান্তিক কৃষকরা তাঁদের উৎপাদিত কৃষিপণ্য তরি-তরকারী, শাক-সবজি বিক্রয়ের জন্য নিয়ে আসেন। এদিন তাদের এসব কৃষিপণ্য বিক্রী করতে সরকারী বড় রাস্তার উপর বসতে হয় আর এ জন্যই মহালছড়ি বাজারে বড় রাস্তা দিয়ে হাটের দিন যান চলাচল বন্ধ রাখতে হয় আর এতে করে সরকারী জরুরী যানবাহন গুলি চলাচলে প্রতিবন্ধকতার কারণে কোন কোন ক্ষেত্রে সরকারী অতিব জনগুরুত্বপূর্ণ কাজের মারাত্মক ব্যাঘাতও ঘটছে, এমনকি মুমুর্ষ রোগীকেও হাসপাতালে নিয়ে যেতে না পারার আক্ষেপের কথাও শুনা যায়। এহেন পরিস্থিতিতে অন্তত মহালছড়ি বাজারের সরকারী বড় রাস্তা যানবাহন ও সাধারণের চলাচল নির্বিঘ্ন করতে ও বাজারের অলি-গলি গুলোকে ঘিঞ্চি অবস্থা হতে সুন্দর সুশৃঙ্খল বাজারে ফিরিয়ে আনতে মহালছড়ি উপজেলা প্রশাসন দেরীতে হলেও প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
সংবাদ সূত্রে আরো জানা যায়, এ বিষয়ে মহালছড়ি উপজেলা একটি জনহিতকর প্রশংসনীয় পরিকল্পনা গ্রহন করেছেন।
উক্ত পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে ৩ জানুয়ারি উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রিয়াংকা দত্ত এবং উপজেলা সহকারী ভূমি কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাহমিনা আফরোজ ভূঁইয়া, মহালছড়ি বাজারের ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, চেয়ারম্যান, মেম্বার, নিরাপত্তা ও আইন শৃংখলা বাহিনী সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, গণমাধ্যম নেতৃবৃন্দ, মানবাধিকার নেতৃবৃন্দদের সম্মিলিত আয়োজনে মহালছড়ি বাজারের সর্বস্তরের ব্যবসায়ী ও দোকানদার এবং বাজার এলাকার আশ-পাশের এলাকার সকল দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে মত বিনিময় সভা করেন এবং সকলের অবগতি ও সর্বসম্মত মতামতের ভিত্তিতে ৬ জানুয়ারী বুধবার এক অভিযান পরিচালনা করেন। অভিযান কালীন সময় বাজারের পত্যেক দোকানদার নিজেরাই নিজেদের দোকানের বর্ধিত অংশ বা চালা সরিয়ে নেন অত্যন্ত সুশৃংখল ভাবে।
উক্ত অভিযান পরিচালনা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট প্রিয়াংকা দত্ত এ এবং উপজেলা সহকারী ভূমি কমশনার ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট তাহমিনা আফরোজ ভূঁইয়া এ সময় তাদের সহযোগিতা করেন মহালছড়ি বাজার চৌধুরী মংশিপ্রু চৌধুরী, মহালছড়ি ১নং সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রতন কুমার শীল, উপজেলা পরিষদ ভাইস চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগ ও বাজার ব্যবসায়ী সমিতি সাধারণ সম্পাদক মোঃ জসিম উদ্দিন, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হাজী ফরিদ সওদাগর সহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ। অভিযান শেষে উপস্থিত ব্যবসায়ী ও সাধারণ জনগণের উদ্দেশ্যে উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন প্রত্যেক দোকানদার ব্যবসায়ীরা নিজ নিজ দায়িত্ববোধ থেকে বাজারের নিরাপত্তার স্বার্থও সৌন্দর্য রক্ষার্থে মনমানসিকতা থাকা অত্যন্ত প্রয়োজন। এ সময় তিনি আরও বলেন, এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
উক্ত অভিযানে স্থানীয় আইন শৃংখলা বাহিনী ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন যুব রেড ক্রিসেন্ট এর সদস্যরা সক্রিয় দায়িত্ব পালন করেন।
তবে সংবাদ সূত্র জানায় মহালছড়ি ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হলেও কার্যক্রমে কোন প্রকার তারতম্য ঘটে নি। এক সময় এলাকার জনসংখ্যা ও দোকানদার ব্যবসায়ী কম ছিল বিধায় বাজারের দোকানদার ও ব্যবসায়ীরা নিজেদের মতো করে ব্যবসা বানিজ্য করে আসছিল। কিন্তু কালের পরিক্রমায় এলাকার জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে মানুষের চাহিদাও প্রয়োজনীয়তা বৃদ্ধি এবং দোকানদার ব্যবসায়ীর সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় বাজারে স্থান সংকুলানের তীব্র অভাব দেখা দেয়ার ফলে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা সহ পরিকল্পনা উপজেলা প্রশাসন যুগোপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণে বাধ্য হয়েছেন।