মোঃ সিরাজুল মনির,চট্টগ্রাম ব্যুরো।
চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে বেসরকারী একটি ব্যাংকে চাকরি নুরুল ইসলাম। বোয়ালখালীর কধুরখীল থেকে প্রতিদিন অফিসে আসা যাওয়া করে। সকাল ৮ টায় বাড়ি থেকে বেড় হয়ে সাড়ে নয়টার মধ্যে অফিসে পৌছাতে হয়। আজ অফিসে যাওয়ার সময় বাধা হয়ে দাড়ায় কালুরঘাট সেতুর মাঝখানে বিকল হওয়া একটি অটোরিকশা। সকাল হঠাৎ করে সেতুর মাঝখানে অটোরিকশা বিকল হয়ে গেলে সেতুর দুপ্রান্তের যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বাধ্য হয়ে হেটে সেতু পার হতে গিয়ে হাজার হাজার পথচারী বিড়ম্বনার শিকার হয়।
এ হলো বোয়ালখালীর চাকরিজীবিদের নিত্যদিনের কাহিনী। ১৯৩১ সালে ব্রিটিশ আমলে নির্মিত হয় কর্ণফুলী নদীর কালুরঘাট রেলওয়ে সেতু। মূলত চন্দনাইশ উপজেলার কাঞ্চননগর রেল স্টেশানে রেল কারখানায় আসা যাওয়ার জন্য ব্রিটিশরা এ সেতু নির্মাণ করেছিল। পরে বাংলাদেশ আমলে সেতুটি দক্ষিণ চট্টগ্রামের সকল উপজেলায় যাতায়াতের যানবাহন চলাচলের জন্য খুলে দেয় বাংলাদেশ সরকার। সেই থেকে দক্ষিণ চট্টগ্রামের বোয়ালখালী, পটিয়া, চন্দনাইশ, সাতকানিয়া, লোহাগাড়া, কক্সবাজার, বান্দরবান জেলার সকল যানবাহন এ সেতু দিয়ে চলাচল করত। পরে এরশাদ সরকার কর্ণফুলী নদীর উপর চাক্তাই দিয়ে দ্বিতীয় কর্ণফুলী সেতু নির্মাণ করলে বোয়ালখালী ছাড়া বাকি উপজেলার যানবাহন নতুন সেতু চলাচল করতে থাকে।
২০০০ পর্যন্ত এ সেতুর মেয়াদ ছিল। বতর্মানে জরাজীর্ণ মেয়াদউত্তীর্ণ এ সেতু বোয়ালখালীবাসীর একমাত্র পারাপার সেতু হিসাবে ব্যবহার হচ্ছে। বোয়ালখালীর প্রায় বিশ হাজার মানুষ প্রতিদিন এ সেতু দিয়ে জীবিকার তাগিদে চট্টগ্রাম নগরীতে আসা যাওয়া করে।
একটি নতুন সেতুর দাবি জানিয়ে এবং তা বাস্তবায়নর জন্য গত বিশ বছর ধরে আন্দোলন করে আসছে বোয়ালখালীবাসী। প্রয়াত সাংসদ মাঈনুদ্দিন খান বাদল এ নতুন সেতু বাস্তবায়ন করার দাবিতে সবসময়ই সোচ্চার ছিলেন এবং বেশ কবার অনশন পালন করে ছিলেন। আওয়ামীলীগ সরকারের প্রতিশ্রুতিও ছিল এখানে একটি নতুন নির্মাণ করা হবে।
পরবর্তীতে সরকার চট্টগ্রাম কক্সবাজার রেললাইন স্হাপনের ঘোষনা দিলে কালুরঘাট নতুন সেতুর নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যায় এবং আশার সন্চার হয় বোয়ালখালীবাসীর। তাদের খুব দ্রুত কালুরঘাট নতুন নির্মাণ শুরু করার জন্য।
বর্তমান সাংসদ মোছলেম উদ্দিন এ সেতু নির্মাণ কাজ শুরু বিষয়ে বলেন, একনেকে পাস হওয়া এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী খুব সহসা এ সেতুর নির্মান কাজ আরম্ভ করে বোয়ালখালীবাসীর দুর্দশা লাঘবের অবসান ঘটাবে।