লেখক:আয়েশা সিদ্দিকা
শিক্ষার্থী:২য় বর্ষ, রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ,চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়।
আপনার, আমার বা আমাদের সন্তানদের আসলেই কি আমরা বুঝি?বুঝার চেষ্টা করি কখনো?তারা কি চায়,জানতে চেয়েছি কখনো?তাদের কি ভাল লাগে করতে?তারা কি হতে চাই ভবিষ্যতে?আমরা কি আজীবন বাবা-মা থাকবো,কখনো বন্ধুর মতো হতে পারবো না?
এমনো হাজার প্রশ্নের মুখোমুখি হয় বাবা-মা।প্রতিটি সন্তান তার বাব-মায়ের কাছে প্রিয়।কিন্তু আমাদের সমাজের প্রতিটা বাবা-মা আগে বাবা-মা হতে চেয়েছে বন্ধু নয়।কেন আমাদের সমাজটা এমন?প্রশ্নটা প্রতিটা সন্তানের।
প্রতিটা সন্তানও তার বাবা-মা কে ভালোবাসে।তাই বাবা-মায়ের সব কথা মেনে নিয়ে তাদের হাসি দেখতে চায় নিজের স্বপ্নের বির্সজন দিয়ে।খুব কম সন্তান পাবেন যাদের সাথে তার বাবা-মার স্বপ্নের মিল আছে।কেন এমনটা হয়?দাবি আপনার বা আমার মতো সন্তানের।
আমার সন্তানটা যেন দুধেভাতে থাকে এমন চাওয়া প্রতিটি বাবা-মায়ের।কিন্তু আমাদের সমাজের একটাই দোষ ,বাবা-মায়েরা বাবা-মা থেকে যায়,বন্ধু হবার চেষ্টা কম করে।আসলেই কি সেটা উচিত?জিজ্ঞাসা সমাজের কাছে।
*চলুন জেনে নিই কিভাবে সন্তানের কাছে বন্ধু হওয়া যায়*
১.সন্তান দুইভাবে পালন করা যায়।১.কারেকশন পদ্ধতি ২.কানেকশন পদ্ধতি।কারেকশন আপনার সন্তানের সাথে আপনার দুরুত্ব করে।কারণ এটাতে সবসময় সন্তানকে ভয় দেখিয়ে,রাগ দেখিয়ে,কখনো মেরে নির্দিষ্ট কাজ করানো হয় বা নির্দিষ্ট বিষয় শিখানো হয়।যেমন ধরেন আপনার সন্তান এসে বলল,আম্মু আমার আজকে ভাল লাগছে না।আমাদের সমাজের প্রায় বাবা-মায়েরা বলে, কেন ভাল লাগছে না?কি হয়েছে?কি সমস্যা?এতো কিছু আছে তাও কেন ভাল লাগছে না?ভাল না লাগলেও এই কাজটা করতেই হবে বা পড়তে হবে।এমনো অনেক প্রশ্ন করে ফেলি ছোট্ট সন্তানটিকে।কখনো তাদের মনের চাওয়াটা পূরণ করি না বা করার চেষ্টা করি না।
দ্বিতীয়টা হল কানেকশন পদ্ধতি যেটা আপনার আর সন্তানের মধ্যে বন্ধুত্ব তৈরি করে।প্রতিটা মানুষ যখন কষ্ট পায় তখন আগে তার প্রিয় মানুষের কাছে যায় শান্ত্বনা পেতে বা ভাবে তাকে বুঝবে।আর তখন যদি প্রিয় মানুষটা আপনাকে না বুঝে, তখন সবচেয়ে বেশি কষ্টটা লাগে।আর কানেকশন পদ্ধতিতে সন্তানের সাথে আগে বন্ধু হওয়া যায়।যেমন, আপনার সন্তান এসে বলল, আম্মু বা আব্বু আমার কিছু ভাল লাগছে না,তখন যদি আপনি বলেন হুম আমি বুঝতে পারছি তোমার ইচ্ছেটা,আমারও ছোট্ট বেলায় মাঝে মাঝে এইভাবে ভাল লাগতো না,দেখোতো এটা করে ভাল লাগছে কিনা।তখন আপনার সন্তান বন্ধুর মতো আপনাকে সব শেয়ার করবে।মনে রাখবেন আপনার সন্তান সবার আগে আপনার কাছে এসেছে আপনাকে আপন ভেবে।তাই আগে বুঝার চেষ্টা করুন তারপর সমাধান দেন।
সবশেষে বলবো আসুন না সন্তানের সাথে বন্ধুর মতো হওয়ার চেষ্টা করি।কখনো সন্তান যাতে বড় হয়ে এটা অনুভব না হয় আমাকে কেউ বুঝার চেষ্টা করে না বা বুঝে না।এমন ভাবে নিজেদের তৈরি করুন যাতে বড় হয়ে সবকিছুর জন্য আপনাকে বা আপনাদের দায়ী না করে।প্রতিটা বাবা-মা কে সম্মান আর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি আর অনুরোধ করছি বাবা-মায়ের পাশাপাশি বন্ধু হবার চেষ্টা করুন।
বাবা-মাকে পরামর্শ না, এটা এক সন্তানের আকুতি প্রতিটা বাবা-মায়ের কাছে।